ঢাকামঙ্গলবার , ১৮ অক্টোবর ২০২২
  1. আন্তর্জাতিক
  2. এক্সক্লুসিভ
  3. খেলা
  4. জাতীয়
  5. তথ্যপ্রযুক্তি
  6. নগর-মহানগর
  7. নাসিক-২০২১
  8. বিনোদন
  9. রাজনীতি
  10. লাইফ-স্টাইল
  11. লিড
  12. লিড-২
  13. লোকালয়
  14. শিক্ষা
  15. শিক্ষাঙ্গন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ এখন চায়ের দোকান!

আবু বকর সিদ্দিক
অক্টোবর ১৮, ২০২২ ১০:৪৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নারায়ণগঞ্জ বন্দরে শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ, সংগঠনটি বন্দর উপজেলায় একসময়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছিল। তবে কালের পরিক্রমায় স্থানীয়ভাবে গুরুত্ব বহন করা এই সংগঠনটি এখন চায়ের দোকানে পরিণত হয়েছে। শুনতে দুঃখজনক হলেও এটাই সত্যি যে শেখ পরিবারের সর্ব কনিষ্ঠ সন্তানের নামে গড়ে ওঠা সংগঠনটির নামে বরাদ্ধ হলেও ভাঙা ভবনের পরিবর্তে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়নি। তবে স্থানীয়দের দাবি নামধারী কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতাদের গাফলতির জন্যই এই পরিণতি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২২নং ওয়ার্ডের রাস্তা প্রশস্তকরনের সময় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের চাহিদা অনুযায়ী সেই স্মৃতি সংসদের ভবনটি ভাঙা হয়। এর পর থেকে শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের কার্যালয় নির্মাণের কোন উদ্যোগ নেয়নি নগর প্রশাসন কিংবা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। কাজী জহির নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা যিনি স্থানীয় ভাবে ভূমিদস্যু হিসেবেই অধিক পরিচিত। তার হস্তক্ষেপের কারনে সেখানে নতুন ভবন নির্মাণ করা যাচ্ছেনা বলে অভিযোগ অনেকের। এই বিষয়ে জানতে চেয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে কেউ কেউ ব্যাস্ততা দেখিয়ে ফোন ছেড়েছেন। আবার বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদের এক নেতার এই বিষয়ে কিছুই জানা নেই বলে জানান।

১৮ অক্টোবর মঙ্গলবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ ভিত্তিপ্রস্তর ও সাইন বোর্ড বিহীন খালি জায়গায় বসেছে চায়ের দোকান। বন্দর বাজারের চা বিক্রেতা চন্দন সেখানে একটি চা ও ভাজা পুরির দোকান বসিয়েছেন। তবে তার দাবি সে ভাড়ার বিণিময়ে দোকন করছেন। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ বন্দর বাজার শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদটির নতুন ভবন নির্মাণ না হওয়ায় এখন এর অস্তিত্ব বিলুপ্তের পথে।

বন্দর উপজেলার তথ্য অনুসন্ধান করে জানা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে সরকারের পক্ষ থেকে চাল বরাদ্ধ দেন শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ মেরামতের জন্য। শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের সভাপতি কাজী জহির (৩৯৮) স্মারকে গত ১৮/৬/১৩ ও ২০/৬/১৩ তারিখে মোট ২ দফায় ৫ টন চাল গ্রহণ করেন। তবে বরাদ্ধ পাওয়ার ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও তা আজও মেরামত হয়নি। এই বিষয়ে দলের নেতা কর্মীদের একটি অংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির সভাপতি মোজাহীদ কবীর মৃধা পিয়াস নারায়ণগঞ্জের আলোকে বলেন, আমি দলীয় সভাগুলোতে বার বার বলেছি যেন ভবনটি পূননির্মাণ করা হয়। এটি এর আগে থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ছিল, পরে এটাকে শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের জন্য বরাদ্ধ দেয়া হয়। স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার দখলে যাওয়ায় সেখানে কোন কাজ করা যাচ্ছে না।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের সেই নেতা কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা গণমাধ্যমে কাজ করেন। আপনারাই খোঁজ নিয়ে দেখেন সেটা কে, এবং তার পিছনে কার হাত রয়েছে? তবে আমাদের দাবি হল খুব দ্রত নতুন ভবন নির্মাণের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের এই লজ্জা ঘুচিয়ে ফেলা হোক। আমি এই বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান এমপি মোহদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

আরেক যুবলীগ নেতা হিমেল খান বলেন, স্থানীয় কিছু ভূমিদস্যুদের কবলে পরে শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদটি এখন বিলুপ্তের পথে। শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ মেরামতের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্ধ আসে কিন্তু তা ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও মেরামত হয়নি। এখন ভূমিদস্যুরা শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের নামে বরাদ্ধ সম্পত্তি নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি করছে।

বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ রশিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নারায়ণগঞ্জের আলোকে বলেন, আসলে সেখানে ওই নামে (শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ) কোন সংগঠন ছিল কিনা সেটিও তিনি জানেন না। এমন ঘটনা ঘটে থাকলে সেটি অবশ্যই লজ্জার ও দুঃখজনক।

এদিকে যার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ তার সাথে যোগাযাগ করা হলে তিনি নারায়ণগঞ্জের আলোকে জানায়, আসলে জায়গা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি মামলা চলমান থাকায় সেখানে কোন কাজ করা যাচ্ছে না। জায়গাটি ভূল বশত গণপূর্ত’র নামে রেকর্ড করা হয়েছে। এই জায়গাটি মূলত তিনজনের মালিকানাধীন। তারা আমাকে পওয়ার দিয়েছেন, সেই মতে আমিই এখন ওই জায়গার মালিক। আর আমি যেহেতু মালিক সেহেতু সেই জায়গায় আমার অফিস থাকতেই পারে। তবে মামলা শেষ হলে পূণরায় শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ করা হবে বলে আশ^াস দেন তিনি।

এই বিষয়ে বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম কুদরত-এ-খুদা জানান, ২০১৩ সালে আমি এখানে দায়িত্বে ছিলাম না। তবুও সরকারি মালামাল হরণ করার কারো অধিকার নেই। শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের নামে যদি সরকারি বরাদ্ধ নিয়ে কাজ না করে তবে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া আমাদেরই দায়িত্ব। বিষয়টি তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।