ঢাকামঙ্গলবার , ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
  1. আন্তর্জাতিক
  2. এক্সক্লুসিভ
  3. খেলা
  4. জাতীয়
  5. তথ্যপ্রযুক্তি
  6. নগর-মহানগর
  7. নাসিক-২০২১
  8. বিনোদন
  9. রাজনীতি
  10. লাইফ-স্টাইল
  11. লিড
  12. লিড-২
  13. লোকালয়
  14. শিক্ষা
  15. শিক্ষাঙ্গন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বঙ্গবন্ধুর সহচরের মরদেহে গার্ড অব অনারে ইউএনওর গাফলিত আবারও বিতর্কের জন্ম দিলেন

আবু বকর সিদ্দিক
সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১ ৬:১৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরা। এবার তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক খাজা মহিউদ্দিনের মরদেহে গার্ড অব অনার প্রদানে অবহেলা করেছেন। ওই ঘটনায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে দলমত নির্বিশেষ সাধারণ মানুষ তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন। একই সাথে এই বিষয় নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাদ জোহর নগরীর ডিআইটিতে রেলওয়ে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে খাজা মহিউদ্দিনের জানাজা হয়। পরে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান গার্ড অব অনার জানাতে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা থেকে পুলিশ পৌঁছালেও সময়মত সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরা তখনও পৌঁছাননি। ফলে প্রচ- বৃষ্টির মধ্যে দীর্ঘসময় জাতির ওই শ্রেষ্ঠ সন্তানের মরদেহ পড়ে থাকে।

এতে করে উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ মরহুমের স্বজনদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হতে থাকে। তারা জানান, গার্ড অব অনারের জন্য বৃষ্টির মধ্যেই খাজা মহিউদ্দিনের মরদেহ নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন তারা। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর ইউএনও’র মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করতে থাকেন স্বজনরা। জানাজা শেষ হওয়ার ঘন্টাখানেক পর উপস্থিত হন সদর ইউএনও। পরে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে খাজা মহিউদ্দিনকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। ইউএনও’র দেরি করার বিষয়টি নিয়ে খাজা মহিউদ্দিনের স্বজনদের পাশাপাশি ক্ষোভ ঝেরেছেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার অ্যাড. নুরুল হুদা। তিনি বলেন, জানাজা হওয়ার পরও গার্ড অব অনার দেয়ার জন্যে সরকারি প্রতিনিধি থাকার কথা থাকলেও তিনি সময় মতো আসেন নাই। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা বৃষ্টির আগেই গার্ড অব অনার সম্পন্ন করতে পারতাম। তাহলে আর এই বিড়ম্বনায় পড়তে হতো না। খাজা মহিউদ্দিন একজন ভাষা সৈনিক এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা। ওনার মত লোকের গার্ড অব অনার দেয়া নিয়ে এই গাফিলতি কোনোভাবেই কাম্য নয়।

আমরা এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এমন ঘটনা দুঃখজনক ও লজ্জার বলে মন্তব্য করেছেন সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক কমান্ডার শাহজাহান ভূঁইয়া জুলহাস। তিনি বলেন, আমি বারবার ওনাকে ফোন করেছি। কিন্তু উনি সময় মতো আসেননি। ওনার আসার কথা ছিল দেড়টায়, উনি আসছেন আড়াইটায়। প্রশাসনের এই দায়িত্বহীনতা কোনোভাবেই মেনে নেয়ার মত না। কথায় কথায় তারা বলে মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। কিন্তু তাদের আজকের আচরণে আমরা খুবই হতাশ। আমি এ ঘটনায় ধিক্কার জানাচ্ছি। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে আজকের ঘটনা দেখে খুব মর্মাহত। কারণ মুক্তিযোদ্ধাদের যদি এভাবে অপমান করা হয় তাহলে রাষ্ট্রের সর্বস্তরের মানুষকে অপমান করা হয়। প্রশাসনের এই এহেন কর্মকান্ড আমি সহ্য করতে পারছি না। পুলিশ একটা থেকে উপস্থিত থাকতে পারলেও উনি কেন পারলেন না? নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু বলেন, খাজা মহিউদ্দিনদের কারণে আমরা আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি।

উনি শুধু আমার ওয়ার্ডের মুরুব্বিই ছিলেন না, উনি নারায়ণগঞ্জের অনেক আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এই বৃষ্টির ভেতর তার মরদেহ নিয়ে আমাদের ভিজতে হয়েছে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। খাজা মহিউদ্দিনের বড় ছেলে তানভীর রহমান পরাগ বলেন, এটা খুব ন্যাক্কারজনক ঘটনা। আজকে একজন সরকারি কর্মকর্তার জন্যে এতগুলো মানুষ বৃষ্টির মধ্যে অপেক্ষা করতে হয়েছে তাও একজন মুক্তিযোদ্ধার লাশ নিয়ে। আসলে কি মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা গার্ড অব অনার দিয়ে সম্মান জানাচ্ছি নাকি এর মাধ্যমে অসম্মান জানাচ্ছি। আজকে এই জন্যেই কি আমার বাবা ভাষা আন্দোলন করেছিলেন, দেশ স্বাধীনের জন্যে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন? প্রশাসনের কাছে আমার আবেদন থাকবে যে, এরকম আর কোনো ঘটনা কোনো মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যেন না হয়। এদিকে জানতে চাইলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা জহুরা বলেন, সঠিক সময়েই বের হয়েছিলাম। কিন্তু সড়কে প্রচন্ড যানজট ছিল। তার উপর বৃষ্টিও পড়ছিল।

যানজট ও বৃষ্টির কারণে দেরি হয়ে গিয়েছে। আমি নিজেও এর জন্য দুঃখিত। আমি নিজেও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। এই ঘটনাটা পুরোটাই ছিল অনাকাঙ্খিত। গত সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে দশটায় ঢাকার বাড্ডায় প্রিমিয়ার প্লাজায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন খাজা মহিউদ্দিন। সংগঠক হিসেবে তিনি মুক্তিযুদ্ধে নারায়ণগঞ্জে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কারাগারের রোজনামচা গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু খাজা মহিউদ্দিনের কথা বেশ কয়েকবার উল্লেখ করেছেন। এদিকে এর আগেও কাশিপুরে ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ নামে এক ব্যক্তি খাদ্য সহয়াতা চেয়ে উল্টো জরিমানার শিকার হয়েছিলেন। এ জন্য ইউএনওর গাফলতিকেই দায়ী করেছিলেন মানুষ। সেসময় তাকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। সেই সমালোচনার রেশ কাটতে না কাটতেই তিনি নতুন করে এই বিতর্কের জন্ম দিলেন। আরও পড়ুন

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।